মনকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি নানাবিধ উপকার রয়েছে গ্রিন টি’তে। তাই দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘গ্রিন টি’। যারা স্বাস্থ্য সচেতন এবং ওজন কমাতে চান- এমন মানুষের কাছে গ্রিন টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জাপান এবং চীনের মতো পৃথিবীর অন্য দেশেও স্বাস্থ্যগত সুবিধার কথা বিবেচনা করে ধীরে ধীরে গ্রিন টি’র জনপ্রিয়তা বাড়ছে। গ্রিন টি জাপানে ‘এন্টি এজিং ড্রিংকস’ হিসেবে প্রতিদিনি পান করেন জাপানিরা।

গ্রিন টি কী? গ্রিন টি বলতে আমরা অনেকে শুধু সবুজ রঙের চা বুঝি। কিন্তু আসলে তা নয়। সাধারণ চায়ের ক্ষেত্রে যেমন অনেক প্রক্রিয়াজাত করে একেক দানাদার আকার দেওয়া হয়, গ্রিন টি’র ক্ষেত্রে বেশিরভাগই তা করা হয় না। এটি প্রক্রিয়াজাতকরণের ধরন সাধারণ চায়ের চেয়ে আলাদা। অনেক ক্ষেত্রে ছোট ছোট আস্ত পাতাই থেকে যায়। কেন গ্রিন টি উপকারী? ওজন কমায় গ্রিন টি বা সবুজ চা বিপাক বৃদ্ধি করে। গ্রিন টি পলিফেনল শরীরের ফ্যাট অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে খাবার থেকে ক্যালরি তৈরি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এটি একদিনে ৭০ ক্যালরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করে। তার মানে নিয়মিত গ্রিন টি পানের মাধ্যমে বছরে ৭ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে সবুজ চা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে, যা প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে গ্রিন টি। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় বিজ্ঞানীরা মনে করেন, গ্রিন টি শরীরের প্রতিটি শিরায় কাজ করে। ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।

তাই কোনো কারণে রক্তচাপে পরিবর্তন হলেও কোনো ধরণের ক্ষতি করে না। তাছাড়া গ্রিন টি রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। খাদ্যনালীর ক্যান্সার রোধ করে গ্রিন টি খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভালো কোষগুলোর কোনো ক্ষতি না করে সার্বিকভাবে ক্যান্সারের কোষ নির্মূল করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। রোগ প্রতিরোধ করে গ্রিন টি দেহের সব রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। সবুজ চা দেহকোষকে ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে, ফলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ত্বকের যত্নে গ্রিন টি ত্বকের বলি রেখা, রোদে পোড়াভাব কমাতে এবং ব্ল্যাক হেডস ও চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও- – নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে। – গ্রিন টি’র ‘ক্যাটেকাইন’ নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মুখের ভিতরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে। – গ্রিন টি স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটায়। – অন্যান্য চা পাতার মতো সবুজ চা পাতায় বিদ্যামান প্রাকৃতিক ‘থিয়ানিন’ নামের অ্যামাইনো এসিড দুশ্চিন্তা ও হতাশা কমাতে সাহায্য করে।

গ্রিন টি’র উপকারিতা গ্রিন টি হোক বা অন্য যে কোনো চা, কোনোটাই অতিরিক্ত পান করা ভালো নয়। খাবার খাওয়ার আগে বা পরে গ্রিন টি খাওয়া ঠিক নয়। এতে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে তো গ্রিন টি একদমই খাওয়া ভালো না। এতে ঘুম না আসার সমস্যা দেখা দিতে পারে। ব্র্যান্ডভেদে এক কাপ গ্রিন টি’তে ক্যাফেইন থাকে ১০০ মিলি গ্রাম। তাই একদিনে পাঁচ কাপের বেশি গ্রিন টি পান করা উচিত নয়।